ঢাকা,সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবৈধ স্বর্ণের দোকানের ছড়াছড়ি

শফিক আজাদ, উখিয়া ::
উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বালুখালী পানবাজার ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম বালুখালী শহুরে মরিয়ম মার্কেটে গড়ে উঠেছে শতাধিক অবৈধ স্বর্ণের দোকান। এসব দোকানে কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই চলছে মিয়ানমার থেকে আসা চোরাই স্বর্ণ বানিজ্য। এছাড়া এলাকায় ব্যাঙ্গের ছাতার মত দোকানগুলোতে চলছে নানা অপকর্ম। বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বর্ণ পাচারকারী ও চোরাাচালানি ও বিভিন্ন এলাকায় অপরাধীদের চুরি, ছিনতাই কৃত স্বর্ণ নিয়ে এই সব দোকান গুলোতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করেছে। স্বর্ণের দোকান খুলেছে এবং তার অন্তরালে অবৈধ ২নাম্বারি স্বর্ণ চোরাচালানের অভিযোগও রয়েছে। যার ফলে সীমান্তবর্তী মিয়ানমার হয়ে উখিয়ার বালুখালী থেকে প্রশাসনের অজান্তেই স্বর্ণ চোরাচালানিরা পুরুদমে চালিয়ে যাচ্ছে পাচার কাজ। উক্ত স্বর্ণের দোকান গুলো স্থানীয়দের নামে-বেনামে থাকলেও মূলতঃ এসব দোকানের অধিকাংশ মালিক রোহিঙ্গারা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নিয়ে স্বর্ণের দোকান খোলার বা স্বর্ণ-অলংকারের ব্যবসা করার নিয়ম/আইন থাকলেই এই সব জুয়েলারী/স্বর্ণেন দোকানগুলোতে তার কোন বালাই নেই। এই সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এর কোন রকমের আইনের তোয়াক্কাই করছে না। যার ফলে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে ২নাম্বারি স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মাথাছড়া দিয়ে উঠছে। এই ছাড়াও স্বর্ণের দোকানগুলোতে এসিড পুড়িয়ে এলাকার মারাত্মক পরিবেশ/এলাকার ক্ষতি সাধন করছে এছাড়া ও বাড়ছে স্বর্ণ চোরাচালান রোহিঙ্গা এবং শরনার্থীরা নানান ভাবে এই সব স্বর্ণের দোকান মালিক কর্তৃক প্রতারনার শিকার হচ্ছে। পাশাপাশি এই শিকারে পড়ছে স্থানীয় বাসিন্দারাও। স্বর্ণলংকার বানাতে/ক্রয় করতে গিয়ে ঠকছে উল্লেখিত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা এছাড়াও ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা এলাকাগুলো ঝুকিপূর্ন হয়ে উঠেছে। এই সব দোকানগুলোর মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ট্রেড লাইন্সেস সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের লাইসেন্স নিয়ে দোকান করার কথা থাকলেও তারা কোন প্রকার কাগজ পত্র ছাড়াই দোকান পরিচালনা করছে।
সরজমিন পশ্চিম বালুখালী মরিয়ম মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দোকান ও স্বর্ণ অলংকার তৈরি কি পরিমান এসিড রাখা হয়েছে এবং তা ব্যবহারে প্রশাসনের কোন অনুমিতর আছে কিনা এবং কত স্বর্ণ মজুদ রেখেছে তা কোথা হতে সংগ্রহ করেছে তার কোন পরিমান/আইনগত বৈধ কাগজ পত্র বা সরকারী প্রশাসনের বিন্দু পরিমান তথ্যবলি দেখাতে সম্পূর্ন ব্যর্থ হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন স্থানীয় লোক জানান, নিউ রূপালী জুয়েলার্স, অষ্টম জুয়েলার্স, মদিনা গোল্ড কালেকশন, মা বনরূপা জুয়েলার্স, আরোহী জুয়েলার্স, আজমীর স্বর্ণকার, মংছিং স্বর্ণকার, পূর্ণিমা জুয়েলার্স, নারায়রপুরী জুয়েলার্স, সৈকত জুয়েলার্স, শুভশ্রী জুয়েলার্স, সৌরভ জুয়েলার্স, সৈকত জুয়েলার্স, এএ স্বর্ণকার, রাখাইন স্বর্ণকার, পিকে স্বর্ণকার, পিজে স্বর্ণকার, অঙ্কিত জুয়েলার্স, শাহজালাল স্বর্ণকার, মদিনা গোল্ড ফ্যাশন, শাহ আমানত স্বর্ণকার, জগন্নাথ স্বর্ণকার, বার আউলিয়া স্বর্ণকার, চেন্নাই স্বর্ণকার, পাহাড়িকা স্বর্ণকার, ঐক্য স্বর্ণকার ও পশ্চিম বালুখালী শাহ মোহছেন আউলিয়া জুয়েলার্সসহ সাইনবোর্ড বিহীন অবৈধ স্বর্ণের দোকান গুলোর কোন প্রকার বৈধতা নেই। সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে স্বর্ণের দোকান খুলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। উক্ত দোকানীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ এসব দোকানের বেশির ভাগ মালিক রোহিঙ্গা।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ক্যাম্প ভিত্তিক গড়ে উঠা স্বর্ণের দোকান সহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব দোকান গুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পাঠকের মতামত: